সাধারণত একটি সংগঠনের ক্রয় কমিটির সদস্য সংখ্যঅ নির্ধারণ করা হয় সংগঠনের নীতিমালা বা পরিচালন নিয়মাবলীর উপর ভিত্তি করে। তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি ক্রয় কমিটি গঠিত হয় ৩ থেকে ৭ জন সদস্য নিয়ে। সদস্য সংখ্যা নির্ধারণে নিম্নলিখিত ভিষয়গুলেঅ বিবেচনায় রাখা হয়।
ক্রয় কমিটি হবে সর্বনিম্ন ৩ তিন জনের এবং ১ একজন হবে প্রধান
ক্রয় কমিটি পরিচালনা পরিষদ প্রদান করবে
ক্রয় কমিটির মেয়াদকাল হবে ১ মাস (তবে পরিচালনা পরিষদ চাইলে ২য় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
সংগঠনের নীতিমালাঃ
অনেক সংগঠনে ক্রয় কমিটির সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে।
ক্রয়ের পরিমাণঃ
বড় ধরনের ক্রয়ের জন্য বেশি সদস্য নিয়ে কমিটি গঠন করা হতে পারে।
প্রয়োজনীয় দক্ষতাঃ
কমিটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন বিভাগের সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাঃ
ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কয়েকজন সদস্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
ক্রয় কমিটির (Purchase Committee) দায়িত্বগুলো সাধারণত একটি সংগঠনের ক্রয় প্রক্রিয়া সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য নির্ধারণ করা হয়। নিচে ক্রয় কমিটির প্রধান দায়িত্বগুলো উল্লেখ করা হলো
চাহিদা যাচাইঃ
সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আসা চাহিদা বা রিকুইজিশন যাচাই করা।
চাহিদা প্রকৃতপক্ষে প্রযোজনীয় এবং যৌক্তিক কিনা তা নিশ্চিত করা।
বাজেট পর্যালোচনাঃ
সংগঠন অনুমোদিত বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত ক্রয় খরচের সামঞ্জস্য যাচাই করা।
বাজেটের মধ্যে থেকে ক্রয় সম্পন্ন করার পরিকল্পণা গ্রহণ করা।
সরবরাহকারী নির্বাচনঃ
সম্ভাব্য সরবরাহকারীদের তালিকা প্রস্তুত করা।
সরবরাহকারীদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞা, বাজারমূল্য এবং প্রস্তাবিত শর্তাবলী মূল্যায়ন করা।
দরপত্র প্রক্রিয়া পরিচালনাঃ
দরপত্র আহ্বান, গ্রহণ এবং মূল্যায়ন করা।
সঠিক নিয়ম ও নীতিমালা অনুসরণ করে দরপত্র যাচাই করা।
চুক্তি সম্পাদনঃ
নির্ধারিত সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা।
চুক্তির শর্তাবলী প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় নিশ্চিত করা।
গুনগত মান নিশ্চিত করাঃ
ক্রয়কৃত পণ্যের বা সেবার গুণগত মান নিশ্চিত করা।
প্রয়োজনীয় মান যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
প্রত্যাশিত ডেলিভারি নিশ্চিত করাঃ
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য বা সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করা।
সরবরাহকৃত পণ্য সঠিক এবং চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী কিনা তা যাচাই করা
রিপোর্টিং এবং ডকুমেন্টেশনঃ
ক্রয় প্রক্রিয়ার সমস্ত কার্যক্রমের লিখিত রেকর্ড রাখা।
অডিটের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করা।
স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাঃ
ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
দুর্নীতি, পক্ষপাত বা অন্যায় প্রভাব মুক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা।
বাজার বিশ্লেষণঃ
বাজারের বর্তমান অবস্থা, পণ্যের দাম এবং বাজারে সহজলভ্যতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা।
ভবিষ্যৎ চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
এই দায়িত্বগুলো সাধারণত সংগঠনভেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে তবে মূল উদ্দেশ্য হলো ন্যায্য এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পন্য বা সেবা সংগ্রহ করা।
একটি সংগঠনের অডিট কমিটির সদস্যসংখা নির্ধারণ করা হয় সংশ্লিষ্ট দেশের আইন, সংগঠনের বিধিমালা এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। তবে সাধারণভাবে অডিট কমিটি ৩ থেকে ৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।
প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ
সদস্য সংখ্যাঃ সাধারণত ৩-৫ জন। সংখ্যাটি এমন হতে হয় যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহন সহজ হয়।
স্বাধীনতাঃ কমিটির সদস্যদের স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।
যোগ্যতাঃ সদস্যদের মধ্যে অন্তত একজনের আর্থিক বা হিসাব-সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
চেয়ারপার্সনঃ একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন যিনি পুরো কমিটির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন।
অডিট কমিটি পরিচালনা পরিষদ প্রদান করবে।
অডিট কমিটি সংগঠনের সমস্ত বিল ভাউচার অডিট করার পর পরিচালনা পরিষদের নিকট রিপেটি করবে।
অডিট কমিটির মেয়াদকাল হবে ১ বছর (তবে পরিচালনা পরিষদ চাইলে ২য় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারবে)
অডিট কমিটির প্রধান দায়িত্ব হলো সংগঠনের আর্থিক বিবরণী, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং অডিট প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করা। এটি সংগঠনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। অডিট কমিটির দায়িত্বগুলো সাধারণত নিম্নরুপ
আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনাঃ
আর্থিক বিবরণী সঠিক ও স্বচ্ছ কিনা তা নিশ্চিত করা।
হিসাব-নিকাশ নীতিমালা এবং মানদন্ড যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা।
বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন এবং অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা।
অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণঃ
সংগঠনের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা কার্যকর কিনা তা নিশ্চিত করা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা।
প্রতারণা বা অনিয়ম সনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
অডিট প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণঃ
অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত অডিট কার্যক্রম সমন্বয় এবং পর্যবেক্ষণ।
অডিটরদের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।
অডিট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।
বিধি এবং আইন অনুসরণ নিশ্চিতকরণঃ
সংগঠনের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট আইন, নীতিমালা এবং নিয়মকানুন অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
অর্থনৈতিক অপরাধ প্রতিরোধে পর্যবেক্ষণ করা।
সংগঠনের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাঃ।
সম্ভাব্য ঝুঁকি সনাক্ত করা এবং তার মোকাবেলার কৌশল প্রণয়ন করা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল নিয়মিত পর্যালোচনা করা।
কমিউনিকেশন এবং পরামর্শ প্রদানঃ
ব্যবস্থাপনার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
বোর্ড অব ডিরেক্টরসকে উপযুক্ত পরামর্শ এবং সুপারিশ প্রদান।
নিরীক্ষার প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া ও কর্মপরিকল্পনাঃ
নিরীক্ষায় উৎত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান নিশ্চিত করা।
অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে সুনিদিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ।
হিসাব রক্ষকের প্রদান কাজ হলো সংগঠনের আর্থিক কার্যক্রম যুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা এবং সঠিক হিসাব রাখার মাধ্যরেম আখ্কি স্থিতি নিশ্চিত করা। নিচে হিসাব রক্ষকের প্রধান কাজগুলো দেওয়া হলো।
আর্থিক লেনদেনের রেকর্ড রাখাঃ
প্রতিদিনের লেনদেন (ইনকাম ও এক্সপেন্ডিচার) সঠিকভাবে ডকুমেন্ট করা।
ক্যাশবুক, লেজার, জার্নাল এবং অন্যান্য হিসাবের বই হালনাগাদ রাখা।
বাজেট প্রস্তুত করা ও নিয়ন্ত্রন রাখাঃ
প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বা মাসিক বাজেট তৈরি করা।
খরচ ও আয়ের তুলানামূলক বিশ্লেষণ করে বাজেটের সঠিকতা নিশ্চত করা।
বেতন ভাতা সংক্রান্ত কাজঃ
কর্মচারীদের বেতন ভাতা এং অন্যান্য সুবিধার হিসাব করা।
আয়কর এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসাব প্রস্তুত করা।
ট্যাক্স এবং আইনি আনুষ্ঠানিকতা পালনঃ
আয়কর, ভ্যাট এবং অন্যান প্রাসঙ্গিক ট্যাক্সের হিসাব করা ও যথাসময়ে জমা দেওয়া।
আইনি নথিপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষন করা।
আর্থিক বিশ্লেষণ ও রিপোর্ট প্রস্তুত করাঃ
প্রতিষ্ঠানের মাসিক, ত্রৈমাসিক এবং বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা।
পরিচালকদের জন্য আর্থিক পরামর্শ প্রধান।
ব্যাংক সংক্রান্ত কাজঃ
অডিট সংক্রান্ত কার্যক্রমঃ
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্টঃ
তহবিল ব্যবস্থাপনাঃ
তহবিল সংগ্রহ এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা।
ঋণ বা বিনিয়োগের সঠিক হিসাব রাখা।
পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারনঃ
আর্থিক ঝুঁকি নিরুপন করা
দীর্ঘ মেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারন করা
একজন দক্ষ হিসাব রক্ষক সংগঠনের আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে।
সহকারী হিসাবে রক্ষকের প্যধান কাজগুলো হলো হিসাব রক্ষনাবেক্ষন এবং আর্থিক তথ্য সঠিকভাবে সংগঠিত করা। সাধারণত একটি প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষন ও হিসাবের সঠিকতা নিশ্চি করতে সহকারী হিসাব রক্ষকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ন। তার দায়িত্বগুলো হলো
হিসাব রক্ষন ও ডকুমেন্টেশনঃ
আস্থিক নথি (বিল, চালান, ভাউচার, ইত্যাদি) তৈরি ও সংরক্ষন।
দৈনিক লেনদেনের রেকর্ড রাখা।
লেজার বই, ক্যাশ বই এবং অন্যান হিসাব বই হালনাগাত করা।
ডাটা এন্টি এবং সফটওয়্যার ব্যবহারঃ
হিসাব সংক্রান্ত ডাটা কম্পিউটার সফটওয়্যারে এন্টি করা।
রির্পোট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ডাটা প্রস্তুত করা।
লেনদেন যাচাই ও সমন্বয়ঃ
ব্যাংক স্টেটমেন্ট যাচাই ও সমন্বয় করা
ক্রয় ও বিক্রয়ের হিসাব করা।
বকেয়া বিল বা পেমেন্ট ফলোয়াপ করা।
অডিটিং ও রিপোটংঃ
অভ্যন্তরীন এবং বাহ্যিক অডিটের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা।
মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক আর্থিক রিপোর্ট প্রস্তুত করা।
ট্যাক্স ও কমপ্লায়েন্সঃ
ভ্যাট, ট্যাক্স ফাইল করা এবং এর প্রয়োজনীয় তথ্য প্রস্তুত করা।
সরকারি নীতিমালা ও নিয়ম-কানুন অনুযায়ী হিসাব রাখা
বাজেটিং ও পরিকল্পনাঃ
বাজেট প্রণয়নে সহযোগিতা করা।
ব্যয়ের পূর্বাভাস এবং এর উপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা তৈরি করা।
অন্য কাজে সহায়তাঃ
হিসাব রক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী অতিরিক্ত কাজ সম্পাদন।
অফিসের অন্যান প্রশাসনিক কাজেও সহযোগিতা করা।
দক্ষতা প্রয়োজনঃ
গনিত ও আর্থিক হিসাব নিকাশে দক্ষতা।
কম্পিউটার ও হিসাব সংক্রন্ত সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শিতা।
বিশ্লেষন ও সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা।
সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা।
সহকারী হিসাব রক্ষকের কাজ প্রতিষ্ঠানের আকার, অকৃতি ও কাঠামোর উপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তবে তার মূল ভূমিকা হলো সংগঠনের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে সঠিক ও কার্যকরভাবে পরিচালনায় সহায়তা করা।
গঠনপ্রক্রিয়াঃ